Cow milk and Buffalo milk differences / গরু ও মোষের দুধের পার্থক্য
মোষের দুধ (Buffalo milk) ও গরুর দুধ (Cow milk) দু প্রকার দুধই পান করার উপযুক্ত। বিদেশে বিশেষ করে আমেরিকা, নিউজিল্যান্ড, ব্রিটেন সহ অন্যান্য ইওরোপিয়ান দেশগুলিতে গরুর দুধের প্রচলন বেশী। মোষের দুধের প্রচলন ভারতে সব থেকে বেশী। ভারত পৃথিবীর বৃহত্তম দুধ উৎপাদনকারী দেশ। গরুর দুধ ও মোষের দুধ মিলে ভারত সবথেকে বেশী দুধ উৎপাদন করে পৃথিবীতে। আজকাল উটের দুধও ভারতের বাজারে পাওয়া যায়। ছাগলের দুধও ভারতের কিছু রাজ্যে পাওয়া যায়। ছাগলের দুধ থেকে সফ্ট কার্ড হয় এজন্য ছাগলের দুধ বাচ্চাদের জন্য বেশী উপযুক্ত। পশ্চিমবঙ্গে যেমন গরুর দুধের প্রচলন বেশী অন্যদিকে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, পান্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান ইত্যাদি রাজ্যে মোষের দুধের প্রচলন বেশী। তবে গরু ও মোষের দুধ এর মধ্যে কি তফাৎ (differences between cow and buffalo milk) সেটা আমরা অনেকেই জানিনা।

গরু ও মোষের দুধ এর পার্থক্য [ Differences between Cow and Buffalo Milk ]
গরুর দুধে ফ্যাট (fat) এর পরিমাণ কম থাকে মোষের দুধের তুলনায় এইজন্য গরুর দুধ হালকা ও সহজে হজম হয়।
গরুর দুধ দেখতে হালকা হলদে রঙের হয় কারন গরুর দুধে বিটা ক্যারোটিন (beta carotene) রন্জক বেশী থাকে, মোষের দুধ ধবধবে সাদা হয়।
মোষের দুধ গরুর দুধের তুলনায় বেশী ঘন হয়। দই, ঘি, ক্ষীর, কুলফি বানানোর জন্য মোষের দুধ উপযুক্ত। গরুর দুধ রসগোল্লা, সন্দেশ, রসমালাই বানানোর জন্য উপযুক্ত। গরুর দুধের ডেয়ারি প্রোডাক্ট সফ্ট (soft dairy product) হয় মোষের দুধের তুলনায়। মোষের দুধের ছানা বা ছানা থেকে তৈরী রসগোল্লা খসখসে হয়।

রাসায়নিক গঠনগত পার্থক্য [ Cow and buffalo milk]
মোষের দুধে পারক্সিডেজ (peroxidase activity) এনজাইম বেশী থাকে বলে বেশীক্ষন ধরে স্বাভাবিক ভাবে ভালো রাখা যায়। গরুর দুধ সেই অর্থে তাড়াতাড়ি খারাপ হয়ে যায়।
মোষের দুধের তুলনায় গরুর দুধে কম মাত্রায় প্রোটিন (protein) থাকে। এজন্য মোষের দুধ হজম করতে বেশী সময় প্রয়োজন। বাচ্চা ও বয়স্কদের মোষের দুধ না খাইয়ে গরুর দুধ খাওয়ানো উচিত।
প্রোটিন ও ফ্যাট এর পরিমান মোষের দুধে বেশী থাকে বলে গরুর দুধের তুলনায় মোষের দুধে ক্যালরি বেশী পরিমানে থাকে। 100 মিলি (ml) মোষের দুধে যেখানে 100 ক্যালরি (calorie) শক্তি থাকে সেখানে গরুর দুধে 60-70 ক্যালরি শক্তি থাকে।

মোষের দুধে গরুর দুধের তুলনায় টোটাল সলিড (TS or total solid) বেশী থাকে জলের মাত্রা (water percent) কম থাকে। এজন্য মোষের দুধ বেশী ঘন হয়।
গরুর দুধের তুলনায় মোষের দুধে বেশী ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম থাকে। অন্যদিকে গরুর দুধে ভিটামিন এর পরিমান বেশী থাকে মোষের দুধের তুলনায়।
মোষের দুধে ফ্যাট এর পরিমান 6% থেকে শুরু হয় ও 10-11% পর্যন্ত থাকে বিভিন্ন ল্যাকটেশন পিরিয়ডে। অন্যদিকে গরুর দুধে ফ্যাট এর পরিমান 3% থেকে শুরু হয় ও 5.5% পর্যন্ত থাকে বিভিন্ন ল্যাকটেশন পিরিয়ডে (lactation period) ।

আগে শুধুমাত্র গরুর দুধ শুকনো (dry) করে মিল্ক পাউডার বানানো হত। ডঃ ভারগিস কুরিয়েন (Dr. Verghese Kurien, Milk Man of India, Father of White Revolution, create Amul Brand, established NDDB, pioneer of Operation Flood) সর্বপ্রথম মোষের দুধ শুকনো করার উদ্যোগ নেন এবং তা বাজারজাত করে সাফল্য লাভ করেন। ইওরোপিয়ান দেশগুলো এতে নিজেদের গরুর দুধের বাজার কমে যাবে এই আশঙ্কায় মোষের দুধ কে দুধ না বলার জন্য প্রচার চালায় কিন্তু ব্যর্থ হয়।